বইঃ জাদুর বাস্তবতা - সংকলকঃ শোআইব আহমাদ।
বইঃ জাদুর বাস্তবতা।সংকলকঃ শোআইব আহমাদ।শারয়ী সম্পাদকঃ শাইখ Tarekuzzaman Tarekপ্রকাশনায়ঃ রুহামা পাবলিকেশন।
Bangla Book Jadur Bastobota.
একজন পাঠক যখন কোন বই খুঁটেখুঁটে পাঠ করে লেখককে প্রতিক্রিয়া জানান; তখন লেখক অনেক উৎসাহিত হোন। এবং সামনের কাজগুলোর ব্যাপারে অনুপ্রাণিত হোন।
অধমের কাঁচা হাতের ছোট্ট ‘জাদুর বাস্তবতা’ বইটি পড়ে শুভাকাঙ্ক্ষী ভাইয়েরা অনেক পরামর্শ ও উৎসাহ দিচ্ছেন। আলহামদুলিল্লাহ! আমি সবকিছুর জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করি।
যাইহোক, জাদুর বাস্তবতা বইটি পড়ে একজন ভাই ইনবক্সে তিনটি প্রশ্ন করেছেন। ইনশাআল্লাহ একে একে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর আমরা দেয়ার চেষ্টা করবো।
প্রথম প্রশ্নঃ
১৯ নম্বর পৃষ্ঠায় লিখেছেন যে, জাদু স্বামী স্ত্রীর মাঝে ঘৃণা সৃষ্টি করতে পারে আবার তৈরিও করতে পারে ২ জনের মাঝে ভালবাসা। এখানে প্রশ্ন হলো যে ভালোবাসা কিভাবে সৃষ্টি করে? আর সেটা সৃষ্টি হলে তো তা ভালো কথা, খারাপ না......।
১৯ নম্বর পৃষ্ঠায় লিখেছেন যে, জাদু স্বামী স্ত্রীর মাঝে ঘৃণা সৃষ্টি করতে পারে আবার তৈরিও করতে পারে ২ জনের মাঝে ভালবাসা। এখানে প্রশ্ন হলো যে ভালোবাসা কিভাবে সৃষ্টি করে? আর সেটা সৃষ্টি হলে তো তা ভালো কথা, খারাপ না......।
আমাদের জবাবঃ
প্রথমত কথাটি বলা হয়েছে ১৬ নং পৃষ্ঠার ২ নং পয়েন্টে, ১৯ নং পৃষ্ঠায় নয়।
প্রথমত কথাটি বলা হয়েছে ১৬ নং পৃষ্ঠার ২ নং পয়েন্টে, ১৯ নং পৃষ্ঠায় নয়।
দ্বিতীয়ত এ বক্তব্যটি আমাদের নিজস্ব নয়; বরং কথাটি বলেছেন হাম্বলি ফিকহের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন ইমাম আল্লামা ইবনে কুদামা আল মাকদেসি রহ.। এজন্য বক্তব্যের সাথে তার উদ্ধৃতিও যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
তৃতীয়ত জাদু কিভাবে ভালোবাসা সৃষ্টি করে, এটা আমাদের জানার কোনো বিষয় নয়; তবে বাস্তবে এর অনেক প্রমাণ আছে।
চতুর্থত জাদু সাধারণত ক্ষতির উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। জাদু দ্বারা কখনও এমন দুই ব্যক্তির মাঝেও ভালোবাসা সৃষ্টি করা হয়, যাদের মাঝে ভালোবাসা থাকাটা দীনের জন্য ক্ষতিকর।
যেমন স্ত্রী বদদীন আর স্বামী দীনদার।
স্ত্রীর কারণে স্বামীর দীনদারি নষ্ট হচ্ছে, আখিরাত বরবাদ হচ্ছে। এখন স্বামী বেচারা তার থেকে আলাদা হতে চায়, কিন্তু স্ত্রী তা হতে দিতে চায় না। সে চায়, তার স্বামীও তার মতো হোক। এজন্য সে জাদুর সাহায্য নিল। স্বামীকে বশ করল। নিজের প্রতি তার ভালোবাসা বৃদ্ধি করল। এটা কি ভালো কিছু হল? না, এটা মন্দ, এটা তার মহাক্ষতির কারণ। এতে প্রতীয়মান হয় যে, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ভালোবাসা সৃষ্টি হওয়া বা ভালোবাসা বৃদ্ধি পাওয়া সর্বক্ষেত্রেই ভালো নয়।
স্ত্রীর কারণে স্বামীর দীনদারি নষ্ট হচ্ছে, আখিরাত বরবাদ হচ্ছে। এখন স্বামী বেচারা তার থেকে আলাদা হতে চায়, কিন্তু স্ত্রী তা হতে দিতে চায় না। সে চায়, তার স্বামীও তার মতো হোক। এজন্য সে জাদুর সাহায্য নিল। স্বামীকে বশ করল। নিজের প্রতি তার ভালোবাসা বৃদ্ধি করল। এটা কি ভালো কিছু হল? না, এটা মন্দ, এটা তার মহাক্ষতির কারণ। এতে প্রতীয়মান হয় যে, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ভালোবাসা সৃষ্টি হওয়া বা ভালোবাসা বৃদ্ধি পাওয়া সর্বক্ষেত্রেই ভালো নয়।
পঞ্চমত জাদু সত্তাগতভাবেই কুফরি বা হারাম কাজ। তাই এদ্বারা কারও উপকার হোক বা ক্ষতি হোক, তাতে বিধানে কোনো পরিবর্তন আসবে না। তাই কোনো অবস্থাতেই জাদুর সাহায্য নেওয়া যাবে না; উদ্দেশ্য ভালো হোক বা মন্দ হোক।
বাকি প্রশ্নগুলোর উত্তর পরের পোস্টে জানিয়ে দেয়া হবে, ইনশাআল্লাহ। যাতে দীর্ঘ পোস্টের কারণে কারোর বিরক্তি না এসে যায়। আল্লাহ আমাদের প্রত্যেকের ভালো কাজগুলো কবুল করুন ও আমাদের সবার ভুলত্রুটিকে ক্ষমা করুন। আমীন!
অভিযোগঃ
২৩ পৃষ্ঠায় লিখেছেন যে জদুকর গ্রহ, তারা নক্ষত্র ইত্যাদির অদৃশ্য শক্তি আহরণ করে জাদু করে। আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি যে এগুলোর কোন শক্তি নেই, বরং যারা ঐসবের পূজা করে থাকে এবং ক্ষমতায় বিশ্বাস করে তারা শিরিক করে।
আমাদের জবাবঃ
প্রথমত আমরা এখানে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের আলোচনা করিনি। এতে মুসলমানদের এ আকিদা শেখানো হয়নি যে, তারা এসব শয়তানি শক্তির পুজো করবে এবং এর ওপর ইমান রাখবে। এখানে শুধু এ আলোচনা করা হয়েছে যে, জাদুকররা কোন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে জাদু করে থাকে।
প্রথমত আমরা এখানে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের আলোচনা করিনি। এতে মুসলমানদের এ আকিদা শেখানো হয়নি যে, তারা এসব শয়তানি শক্তির পুজো করবে এবং এর ওপর ইমান রাখবে। এখানে শুধু এ আলোচনা করা হয়েছে যে, জাদুকররা কোন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে জাদু করে থাকে।
দ্বিতীয়ত আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর বিভিন্ন বস্তুতে অনেক রকম শক্তি ও প্রভাব রেখেছেন। কিন্তু সবগুলোর ব্যবহারের অনুমতি দেননি। যেমন শয়তানের পুজা করলে সে আপনাকে পার্থিব বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য করবে, উপকার করবে, একথা বলাকে কেউ শিরক বলে না। অনুরূপ বাস্তবতার আলোকে দেখা গেছে, বদনজরের কুপ্রভাব আছে। তাই কেউ যদি বলে, বদনজরে সমস্যা হয়, তার এ বলাতে কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা হবে তখন, যখন সে নিজে বদনজর দিবে।
তৃতীয়ত সকল শক্তির উৎস হলেন একমাত্র আল্লাহ। তিনিই সবাইকে শক্তি দান করেছেন। মাখলুকের শক্তি হাকিকত নয়; বরং মাজাজ। এর উদ্দেশ্য পরীক্ষা করা যে, কে কোন কাজে এসব শক্তি ব্যয় করে। শক্তি বা প্রভাব যেমন জীবের মধ্যে রয়েছে, অনুরূপ জড়বস্তুর মধ্যেও রয়েছে। এটাকে অস্বীকার করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তারকাপুজারীদের মধ্যে যারা জাদু করে, তারা শুধু পুজাই করে না; বরং তাদের জ্যোতির্বিদ্যাও অর্জন করতে হয়। তারকার উদয়-অস্ত, এগুলোর গমনাগমন, সময়-স্থান ইত্যাদি বিষয়ে নিখুঁত হিসাব রাখতে হয়। সন্দেহ নেই যে, এসব কাজ কুফরি, কিন্তু এর কুপ্রভাব থাকার বিষয়কে অস্বীকার করাও একটি অজ্ঞতা। আমরা এখানে এ মেসেজই দিয়েছি যে, কিছু জাদুকর এসব তারকারাজির সাহায্যেও জাদু করে থাকে। এতে ইমান-আকিদার প্রশ্ন তোলা সম্পূর্ণ অবান্তর।
জাদুর বাস্তবতা বইটির উপর জনৈক ভাইয়ের ৩টি প্রশ্নের দ্বিতীয়টির জবাব দেয়া হলো। জাদুটোনা, তন্ত্রমন্ত্র, বদনজর ও ইত্যাকার বিষয়গুলোর বাস্তবতা ও এই সংক্রান্ত বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে বইটি পড়া যেতে পারে, ইনশাআল্লাহ।
No comments